মা দিবস: ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতার এক বিশেষ দিন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিশ্বজুড়ে মা দিবস পালিত হয় মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশের জন্য। প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার এই দিনটি উদযাপিত হয়। ২০২৫ সালে মা দিবস পড়েছে ১১ মে, রবিবারে।
ইতিহাস ও সূচনা:
মা দিবসের আধুনিক রূপের সূচনা হয় যুক্তরাষ্ট্রে, এবং এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিত আনা জার্ভিস (Anna Jarvis)। তার মা, অ্যান রিভস জার্ভিস (Ann Reeves Jarvis), ছিলেন একজন সমাজকর্মী, যিনি ১৯ শতকে স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করেছিলেন। মায়ের মৃত্যুর পর, আনা জার্ভিস ১৯০৮ সালে ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গ্রাফটন শহরে প্রথম মা দিবস উদযাপন করেন। তিনি এই দিনটিকে জাতীয় ছুটি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য প্রচারণা চালান, যার ফলস্বরূপ ১৯১৪ সালে প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেন।
আনা জার্ভিসের দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিণতি:
আনা জার্ভিস মা দিবসকে একটি ব্যক্তিগত ও আন্তরিক উপলক্ষ হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন, যেখানে সন্তানরা তাদের মায়েদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। তবে, সময়ের সাথে সাথে এই দিনটি বাণিজ্যিক রূপ নিতে শুরু করে, যা আনা জার্ভিসের কাছে অগ্রহণযোগ্য ছিল। তিনি এই বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন এবং জীবনের শেষ সময়ে দারিদ্র্য ও অসুস্থতার মধ্যে দিন কাটান। তিনি কখনো বিয়ে করেননি বা সন্তান নেননি, এবং ১৯৪৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
আধুনিক উদযাপন: বর্তমানে মা দিবস বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হয়। এই দিনে সন্তানরা তাদের মায়েদের ফুল, উপহার, কার্ড ইত্যাদি দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। অনেকে মায়েদের জন্য বিশেষ খাবার প্রস্তুত করে বা বাইরে খাওয়াতে নিয়ে যায়। তবে, আনা জার্ভিসের মূল উদ্দেশ্য ছিল মায়েদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, যা আজও অনেকেই পালন করে থাকেন।
মা দিবসের এই ইতিহাস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মায়েদের প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য একটি বিশেষ দিনের প্রয়োজন হতে পারে, তবে প্রতিদিনই মায়েদের সম্মান ও ভালোবাসা দেওয়া উচিত
What's Your Reaction?
Like
0
Dislike
0
Love
0
Funny
0
Angry
0
Sad
0
Wow
0
