লিবিয়ায় নিখোঁজ ছেলেকে ফিরে পেতে পরিবারের আকুতি

Apr 20, 2025 - 11:43
Apr 20, 2025 - 11:50
 0  2
লিবিয়ায় নিখোঁজ ছেলেকে ফিরে পেতে পরিবারের আকুতি

লিবিয়ায় মাফিয়াদের কাছে এক বছর যাবৎ জিম্মি ছেলেকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা। 

রোববার (২০ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী রবিনের মা রহিমা বেগম বলেন, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের ১০ তারিখ বেলা ১১টার দিকে আমার আত্মীয় সাধনা বেগম সাধুনী আমাদের বাসায় বেড়াতে আসেন। আত্মীয় হিসেবে নানা আলোচনা হয় তার সঙ্গে। আলোচনার একপর্যায়ে তিনি আমাদের ছোট ছেলে মো. রবিনকে ইতালি পাঠানোর প্রস্তাব করে। আমরা পরিচিত লোক না থাকা, টাকা-পয়সা না থাকা ইত্যাদি বলে প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাই। তখন সাধনা বেগম বলেন, তার নিজের ছেলেকে মনির হোসেন ইতালি পাঠিয়েছে। আমরা বলি মনিরকে তো আমরা চিনি না। তখন সে সঙ্গে সঙ্গে মনির ও তার স্ত্রী দিনা ইসলামকে ফোন করে কথা বলে। এর এক সপ্তাহ পরে মো. মনির ও তার স্ত্রী দিনা ইসলাম আমাদের বাসায় আসে। তখন মনিরের সঙ্গে ইতালি ফ্লাইটে পাঠাতে হলে ১৪ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তি হয়।

তিনি আরও বলেন, কিছু দিন পর টাকা অল্প সংগ্রহের কথা জানালে ২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে ১০টার সময় দালাল মনির ও তার স্ত্রী দিনা ইসলামসহ কয়েকজন আমাদের আদাবরের বাসায় আসে। এ সময় আমাদের ছেলে রবিনের পাসপোর্ট ও নগদ ৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়। তখন দিনা, সাধুনী ও দালাল মনির জানায়- তারা রবিনকে সঙ্গে করে নিয়ে ইতালির কর্মস্থলে যাবে। রবিনকে চাকরিতে যোগদান করিয়ে আবার যখন ঢাকায় ফিরবে তখন বাকি ৯ লাখ টাকা দিলেই হবে। এর এক সপ্তাহ পর ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রবিনকে নিয়ে দালাল মনির শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে রবিনের বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন পর খবর পেলাম ইতালি না নিয়ে তাকে লিবিয়ায় নিয়ে অন্ধকার ঘরে আটকে রাখে। আটকাবস্থায় রবিনকে ভয়ানক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতন চলাকালীন সময় তারা ফোনে রবিনকে আমাদের সঙ্গে কথা বলায় টাকা পাঠানোর জন্য। রবিন নির্যাতনের যন্ত্রণায় কাতরাতে-কাতরাতে আমাদের জানায় দ্রুত টাকা পাঠানোর জন্য

তিনি বলেন, এ কথা জানার পর আমরা মনির ও সাধুনীকে বলি তোমরা আমার সন্তানকে দেশে ফিরিয়ে আনো। তাতে আমাদের সন্তানের ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। সন্তানের জীবনের কথা চিন্তা করে তখন আমরা নিরুপায় হয়ে বিভিন্ন তারিখে মনিরের পিতা কালাম হাওলাদার, মনিরের স্ত্রী দিনা ইসলাম, সাধুনীর মেয়ে রেখা আক্তার ও মনিরের বোন সিমার ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেই। এ ছাড়া পরবর্তী সময়ে নগদে আরও টাকাসহ মোট ১৮ লাখ টাকা নেয় তারা।

তিনি আরও বলেন, এত টাকা দেওয়ার পরও গত বছরের মার্চ মাস থেকে আমরা আর ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। আমাদের ধারণা এই মানব পাচারকারীর রবিনকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। এমতাবস্থায় আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলতে চাই, আমাদের সন্তানকে ফিরে পেতে তারা যেন উদ্যোগ গ্রহণ করে।

What's Your Reaction?

Like Like 1
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0